বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের একটি অন্যতম জেলা সাতক্ষীরা, যেখানে অবস্থান করছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। একসময় সাতক্ষীরায় উপকূলীয় অঞ্চলসহ অন্যান্য অঞ্চলে ফসলের ব্যাপক ফলন দেখা গেলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। একাধিকবার দক্ষিণাঞ্চলের বেরিবাধ ভেঙে সাগরের নোনা পানি প্রবেশ ও দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকার কারণে জমিতে যেমন লবণাক্ততা বেড়েছে, ঠিক তেমনি সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং ঋতু বৈচিত্রের মধ্যে ছেদ ঘটায় এই অঞ্চলের গতানুগতিক চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে কমে যাচ্ছে ফসলের ফলন। উপকূলী অঞ্চলে লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে অনেক ফসল এখন চাষবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফসলের উৎপাদন কমে যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা, ফলে অনেক শিশু জড়িয়ে পড়ছে শিশুশ্রমে। মেয়ে শিশুর ভরণপোষণ করতে না পারার কারণে অনেক ক্ষেত্রে বাল্যবির ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। দৈনন্দিন কৃষি কাজে লবণাক্ত পানি ব্যবহারের ফলে নারীরা সহজেই লিউকোরিয়া সহ অন্যান্য পানিবাহিত রোগে ও চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়াও জলবায়ুর প্রভাব, দীর্ঘ সময় শীত থাকা ও অসময়ে বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ আম গাছে দেখা যাচ্ছে না আশানুরূপ মুকুল। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আম চাষিরা। ধানের ক্ষেতেও সেই একই চিত্র। ধানের ফলন কম হওয়ায় ও ধান পাকতে বেশি সময় লাগায় কৃষকরা পরবর্তী ফসল চাষ করতে পারছে না। ফলে আর্থিকভাবে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা।
মন্তব্যসমূহ